
অর্থাভাবে পাঠ্যবই কিনতে না পেরে আত্মহত্যা
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর সরকারী কলেজের বাংলা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী ফরিদা খাতুন (২০) অর্থাভাবে পাঠ্যবই কিনতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। সে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা জোতপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর কৃষক শামছুল হক শান্তর মেয়ে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, মাস্টার্স পাশ বেকার বড় ভাই শেখ ফরিদ ও হতদরিদ্র দিনমজুর পিতা শামছুল হক শান্তর কাছে একটি পাঠ্যবই কিনে চেয়ে না পেয়ে উল্টো বকাঝকা শুনে রাগে ক্ষোভে ও অভিমানে মঙ্গলবার ভোররাতে সে নিজ ঘরের আড়ার সাথে ওরনা পেচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। বাড়ির লোকজন সকালে তার লাশ ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে বুধবার ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরাকাবাসি আরো জানায়, নিহত ফরিদা খাতুন অত্যন্ত মেধাবী,বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র ধার্মীক মেয়ে ছিল। বাড়ির ভিতরে ও বাইরে সব সময়ই সে পর্দা করত। এ ছাড়া পিএসসি ও জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এইচএসসিতে ৪.০৮ পেয়েছে। সে শাহজাদপুর সরকারী কলেজের বাংলা অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিল। সে বেশ কিছু দিন ধরে তার বাপ ও ভাইয়ের কাছে একটি পাঠ্যবই কিনে চায়। তার দরিদ্র পিতা অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে ৭‘শ টাকা জোগার করে দেয় বই কেনার জন্য। তার বড় ভাই শেখ ফরিদ ঘটনার আগের দিন সোমরার শাহজাদপুর বাজারে বইটি কিনতে এসে আসে। কিন্তু বইটির দাম আরো বেশি হওয়ায় বাড়তি টাকার অভাবে শুন্য হতে বাড়ি ফেরে। এতে ফরিদা হতাশ হয়ে এই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এই হৃদয় বিদারক ও মর্মান্তিক ঘটনায় শাহজাদপুর সরকারী কলেজের ছাত্র-ছাত্রী ও সহপাঠীদের মাঝে চলছে শোকের মাতম।
শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় আমরাও মর্মাহত হয়েছি। অর্থাভাবে একজন মেধাবী ছাত্রীর এ ভাবে মৃত্যু বরণ করা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।