
কালের সাক্ষী ঘাটাইলের ধলাপাড়া জামে মসজিদ
রেজাউল করিম খান রাজু, ঘাটাইল : কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে ধলাপাড়া জামে মসজিদ। দেশের অন্যান্য উপজেলার ন্যায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় রয়েছে নতুন পুরানো অনেক মসজিদ। ঠিক তেমনি শত বছরের পুরনো একটি মসজিদ ধলাপাড়া জামে মসজিদ।
ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিঃমিঃ দূরে ঘাটাইল-সাগরদিঘী সড়কের পাশে ধলাপাড়া বাজারে মসজিদটি অবস্থিত। দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ সমৃদ্ধ মসজিদটির বাইরের পূর্বপাশের ফলকে লেখা থেকে জানা যায়, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৯১৭ সালে তৎকালিন ধলাপাড়ার জমিদার ছমির উদ্দিন চৌধুরী মসজিদটি নির্মান করেন। মসজিদটিতে রয়েছে সুদৃশ্য সাতটি গম্বুজ। মূল অংশের উপরে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। মূল অংশের উত্তর ও দক্ষিন পাশের গম্বুজের চেয়ে মাঝের গম্বুজটি একটু বড়। বারান্দায় রয়েছে চারটি ছোট আকারে গম্বুজ। গম্বুজগুলো অনেকটা মোগল আমলের মসজিদের গম্বুজের সাথে যথেষ্ট মিল আছে।তাই অনেকে একে মোগল মসজিদও বলে থাকে। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্ত যথাক্রমে ৩৬ ও ২৭ হাত। প্রতিটি দেয়ালের পুরত্ব প্রায় আড়াই হাত। মসজিদটির মূল অংশে ও বারান্দায় রয়েছে পাঁচটি করে দরজা যার উপর রয়েছে লোহার খাঁচকাটা কারুকাজ। বাহির থেকে আলো-বাতাস যেন অনায়েসে প্রবেশ করতে পারে তার জন্যই এ ব্যবস্থা।প্রতিটি দেয়ালে প্রচুর কারুকাজ থাকলেও পশ্চিমের দেয়ালে কারুকাজ রয়েছে বেশী যা সবার দৃষ্টিকাড়ে।জানাযায়,মসজিদটি নির্মানে ব্যবহার করা হয়েছে চুন, সুরকী ও সাদা সিমেন্ট। মসজিদটির পূর্বপাশে রয়েছে সুউচ্চ মিনার যার কারুকাজও চোখে পরার মত। মসজিদটিতে একসাথে প্রায় ২০০ লোক নামাজ আদায় করতে পারে।
শত বছর ধরে ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে মসজিদটি। কিন্তু মুসলিম ঐতিহ্যের চোখ জুড়ানো এই শৈল্পিক স্থাপনাটি সংস্কারের অভাবে দিনদিন অনেকটাই মলিন হয়ে যাচ্ছে।
মসজিদটির দেখভালে দায়িত্বে থাকা জমিদার ছমির উদ্দিন চৌধুরীর বংশধরের একজন ববিন হায়দার চৌধুরী জানান,আমরা মসজিদটির পূর্বপাশের মিনারের সংস্কার কাজ করেছি কিন্তু মসজিদের ভিতর ও বাহিরের সংস্কার কাজ করাটা অনেক ব্যায়বহুল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বা মেরামত না করার ফলে ভিতরের আস্তর গুলো খুলে পড়া শুরু করছে। ববিন হায়দার চৌধুরীসহ এলাকার লোকজনের দাবী স্থানীয় প্রশাসন যেন মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সংস্কারের ব্যবস্থা করে।