
ঘাটাইলে অপহৃত স্কুলছাত্র সৈকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
রেজাউল করিম খান রাজু, ঘাটাইল : টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে অপহৃত স্কুল ছাত্র সৈকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মামলার প্রধান আসামী আরিফ রব্বানী। গত ২৮ মে আরিফ রব্বানীকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা হরিপুর গ্রামের তার বোনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । পরে তাকে ২৯ মে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের আদালতে হািজর করা হলে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে ঘাটাইল থানার ওসি মো. মহি উদ্দিন পিপিএম জানান, আরিফ রব্বানী ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার হরিপুর গ্রামের আঃ আজিজের ছেলে। তিন বছর আগে সে দিন মজুরের কাজ করার জন্য ঘাটাইল উপজেলার চানতারা গ্রামের হানিফ মাষ্টারের বাড়িতে আসে। তিন দিন কাজ করে চলে যায় । পরের বছর আবার সে কাজ করতে আসে। সেই সুবাদে পরিবারটির সাথে আরিফ রব্বানীর আত্বীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়। সৈকতের মামাতো ভাই সাগরের সাথেও আরিফ রব্বানীর সখ্যতা গড়ে উঠে। সৈকতের বড় দুই বোন তানিয়া (২০) সাথে আরিফ ও সেতু(১৫) সাথে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সাগর সেতুকে বিয়ে করবে বলে আরিফকে জানায় । সাগর আরিফকে তানিয়াকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আরিফ প্রথমে প্রত্যাখান করে পরে রাজি হয়। সাগর জানায় তাদের বিয়ে পথে বড় বাধা সৈকত। কারন সৈকত থাকলে সম্পত্তির ভাগ পাওয়া যাবে না। সেই মোতাবেক সৈকত অপহরণ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে আরিফ চানতার গ্রামে আসে। ওই দিনই সৈকতকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আরিফ ও সাগর। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৮ মে দুপুরে সৈকতকে অটো রিক্্রাযোগে চানতারা থেকে ঘাটাইল নিয়ে আসে। সেখান থেকে প্রান্তিক সার্ভিস যোগে তারা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পৌছায়। মুক্তাগাছায় পৌছে তারা রাজবাড়ি সহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে বেড়ায়। পরে তারা সৈকতকে নিয়ে ময়মনসিংহের বেগুনবাড়ির ব্রম্মপুত্র নদীর সুইচগেট এলাকায় বেড়াতে যায়। সেখানে সন্ধ্যায় এলাকটি জনমানব শূন্য হয়ে পড়লে সাগর সৈকতের গলা চেপে ধরে আর মুখ চেপে ধরে আরিফ । সৈকতের মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা দুজনেই সৈকতের লাশ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।
এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ওসি মোঃ মহি উদ্দিন পিপিএম জানান, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরিফ রব্বানী ও সাগর নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। আসামী আরিফ রব্বানী সৈকতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায় স্বীকার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের কাছে আসামীদের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মে বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় ঘাটাইলে উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের চানতারা উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শেণির ছাত্র আসাদুর রহমান সৈকত। নিখোঁজের পর সৈকতের বাবা স্কুল শিক্ষক হানিফ উদ্দিন ২১ মে আরিফ রব্বানীকে প্রধান আসামী করে ঘাটাইল থানায় অপহরণ মামলা করেন।