
চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে নগরবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান আনিসুল হকের
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, শুধু সিটি করপোরেশনের পক্ষে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এ জন্য নগরবাসীকে আরও সচেতন হতে হবে। চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। নিজ বাসা-বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধংস করে ফেলতে হবে।’
তিনি আজ শুক্রবার ডিএনসিসি নগর ভবনে ‘চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব এবং ডিএনসিসি থেকে গৃহীত কার্যক্রম’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি নিবিড়ভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে মেয়র আনিসুল হক বলেন, যেখানে পাঁচদিন পর-পর মশা নিধনের জন্য ওষুধ প্রয়োগের কথা, সেখানে আমরা তিনদিন পর পর ওষুধ প্রয়োগ করছি। এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত ধ্বংশের জন্য ওয়ার্ড কমিশনাররা কাজ করছেন।
তিনি চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি গৃহীত কর্মসূচির বর্ণনা করে বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সারা পৃথিবীতেই কমিনিউটি পার্টিসিপেশন বা জনগণের সম্পৃক্ততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নাগরিকদের সচেতনতার জন্য ওয়ার্ড ও জোন পর্যায়ে র্যালি, শিক্ষক ও মসজিদের ঈমানগণের মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে বার্তা প্রচার করছি। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে অঞ্চল ও ওয়ার্ড পর্যায়ে জনসচেতনতামূলক সভা, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং, দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার করেছি।
আনিসুল হক বলেন, মশা নিধনে ডিএনসিসির ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বরাদ্দ ২৩ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে যেভাবে মশা নিধনে ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাতে এই বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। তিনি জানান, বর্তমানে মশা নিধনের জন্য ডিএনসিসির হস্তচালিত মেশিনের সংখ্যা ৩৮৭টি, ফগার মেশিন ২৫৫টি, হুইল ব্যারো মেশিন ১০টি এবং ভ্যাহিক্যাল মাউন্টেড ফগার একটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এডিস মশা ড্রেন, ময়লা আবর্জনা ও জলাশয়ে জন্মায় না, বরং এডিস মশা মূলত বাসা-বাড়ির ভেতরে ফ্রিজ, ট্রে, ফুলের টব, সানসেড এবং ছাদে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে জন্মে। তাছাড়া বাসা-বাড়ির আশপাশে পড়ে থাকা ভাঙ্গা হাড়ি, ক্যান, পরিত্যাক্ত টায়ার এবং নির্মাণাধীন ভবনে ব্যবহৃত চৌবাচ্চা, বালতি, ড্রাম ইত্যাদি স্থানে জমে থাকা পানিতে জন্মে।
ডিএনসিসি মেয়র আরো বলেন, চিকুনগুনিয়া রোগ বহনকারী এডিস মশা বাসা-বাড়ির ভেতরে প্রজনন করে, যা নিধন করা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে পুরোপুরি সম্ভব নয়। বাসা-বাড়িতে নিরাপত্তাজনিত কারণে কীটনাশক প্রয়োগ করাও ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে মশারির মধ্যে রাখা দরকার। এসব বিষয়ে জনগণকে সচেতন হতে হবে এবং নিজ বাসা-বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাউল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়া, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কমডোর আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ডিএনসিসির আমন্ত্রণে সংবাদ সম্মেলনে তিন জন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান (এপিডেমিওলজিস্ট), ডা. তৌহিদ উদ্দীন (এন্টোমলজিস্ট ) ও ডা. মুনজুর এ চৌধুরী (এন্টোমলজিস্ট)।