
জনগণের নিকট অগ্রহণযোগ্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হবে না : ওবায়দুল কাদের
জাগ্রতবাংলা ২৪ ডটকম: জনগণের নিকট অগ্রহণযোগ্য কোনো ব্যক্তিকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় বিআরটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, সহায়ক সরকারের বিধান কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মওদুদ আহমদ আইনমন্ত্রী ছিলেন। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তাকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। এখন তিনি আদালতের রায় মানেন না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আইনের শাসন কতটুকু প্রতিষ্ঠিত হবে এতেই বুঝা যায়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে পচনশীল ও রফতানিযোগ্য গার্মেন্টস পণ্যবাহী যানবাহন ব্যতীত সকল প্রকার কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, লরিসহ ভারী যানবাহন চলাচল ঈদের আগে ও পরের তিনদিন বন্ধ থাকবে। মহাসড়কে মোটরসাইকেলে হেলমেটবিহীন ও দুইজনের অধিক ব্যক্তির চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে সওজ-কুমিল্লার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শাহাব উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলামুর রহমান, হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ, বিআরটিএ-কুমিল্লা সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি) মো. নুরুজ্জামান, সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপালী মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শুত্রবার, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ১৫১ জন সংসদ সদস্য (এমপি)। এরমধ্যে ১২৮ জনই ছিলেন বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এসব নির্বাচিতরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করলেও এবার তাদের কপাল পোড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তালিকা থেকেই বেশির ভাগকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করছে দলটি। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এমন আভাস দিয়েছেন।
সূত্রমতে, ২০১৪ সালে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় সংসদ সদস্য হলেও নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাদের হয়নি। ফলে তাদের ক্ষেত্রে এবার বিকল্প চিন্তা করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা।
তিনি মনে করেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। প্রার্থীই হবেন এই নির্বাচনের মূল বিষয়। তাই নির্বাচনী কৌশল জানেন, নির্বাচন করার অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারাই প্রাধান্য পাবেন দলীয় মনোনয়নে। তবে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা থাকলেও এমপি হয়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার যাদের নাম এসেছে, তারাও মনোয়ন পাবেন না।
বিশেষ করে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা এমপিদের এবার একেবারেই ছাড় দেবেন না শেখ হাসিনা। বাদের তালিকায় থাকবেন তারাও। এদিকে, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েও যারা রাজনীতিতে ভাল করেছেন, জনসেবায় নিবেদিত ছিলেন, এমপি হিসেবে এলাকায় জনপ্রিয়; তারা আবারও মনোনয়ন পাবেন বলে দলটির নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, অতীতে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা যাদের নেই, তাদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। যারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন এবং এর আগের নির্বাচনগুলোতেও মনোনয়ন পেয়েছেন, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন ও শারীরিকভাবে সুস্থ্যও আছেন, তাদের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে তার।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, প্রত্যেক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তন ঘটে। এবারও কেউ বাদ যাবেন, কেউ নতুন আসবেন। এটাই নিয়ম।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটা বড় দল এখানে অনেকেই যোগ্য রয়েছেন। তাই প্রার্থী বদল করে দেওয়া হয়। তবে মনোনয়ন কাকে দেওয়া হবে না হবে, সেটার পুরো এখতিয়ার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোর্ডের। এ বিষয়ে চূড়ান্ত করে এখন কিছু বলা যাবে না। সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে বড় ধরনের রদবদল আসবে। বেশ কিছু ‘ক্যাটাগরি’ নির্ধারণ করে এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে।