
টাঙ্গাইলে বেহাল সড়কে পৌরবাসীর দুর্ভোগ
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: টাঙ্গাইল পৌরসভার বেশির ভাগ সড়কের অবস্থা বেহাল। কোন কোন রাস্তায় বিটুমিনের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছোটখাটো খালে পরিণত হয় ওইসব সড়কগুলো। ফলে পৌরসভার সড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীরা চমর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। একই সাথে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা থাকায় সেখানকার ব্যবসায়ীরাও রয়েছে সীমাহীন বিপাকে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে টাঙ্গাইল পৌর সভার বটতলা থেকে বেবিস্ট্যান্ড সড়কটির বেহাল দশা চলছে। একই অবস্থা পৌর সভার কাগমারা, থানাপাড়া, আদালতপাড়া, কোদালিয়া, বিশ্বাসবেতকা ও সাবালিয়ার সড়কগুলোর। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কগুলোর এ অবস্থা থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। মাঝে মধ্যে নামমাত্র ইট-বালু দিয়ে সড়কের সংস্কার করা হলেও সপ্তাখানেক যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। পৌর কর্তৃপক্ষ ট্যাক্স বাড়ালেও পৌরবাসীর সুবিধার জন্য কোন কিছুই করা হচ্ছে না।
বেবিস্ট্যান্ড-বটতলা সড়কটি দিয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয় ও এমএম আলী কলেজসহ বিভিন্ন নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নগরবাসী ও নাগরপুর উপজেলাসহ পশ্চিম টাঙ্গাইলের লোকজন চলাচল করে। এছাড়া ওই সড়কের পাশেই শহরের বড় পার্ক বাজার অবস্থিত। এ সড়ক দিয়েই যেতে হয় ঈদগাহ ময়দান, মার্কাস মসজিদ, র্যাব-১২ এর কার্যালয়, স্টেডিয়ামসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। ২৪ ঘণ্টা এ সড়ক দিয়ে ট্রাক, বাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা সহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির দুই পাশে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সড়করটির বেহাল অবস্থা থাকায় প্রতিদিন সহ¯্রাধিক যানবাহনের চাপ সইতে পারছেনা, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ সড়ক দিয়ে হেঁটে চলাচল করার মত অবস্থা একেবারেই নেই।
সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক নাগরপুরের আলী হোসেন, সদর উপজেলার চরাঞ্চলের সাইফুল, আহাম্মদ আলী জানান, আমরা উপজেলায় থাকি। আমাদের পৌর সভা নেই। কিন্তু তারপরও এসব সড়কের চেয়ে আমাদের সড়কগুলো অনেকগুনে ভালো। এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে খুবই কষ্টকর হয়ে পরে। তবুও বাধ্য হয়ে চালাতে হয়। মাঝে মধ্যে গাড়ি বিভিন্ন সময় উল্টে পরে যায়।
শহরের রিকশা চালক জালাল, হামিদ আলী, রহমত উল্লাহ, জনি এবং ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালক শফিক, শাহালম, রাজ আলী, নজরুল ইসলাম সহ অনেকেই জানান, শহরের প্রায় সবগুলো শাখা সড়কের অবস্থাই বেহাল। তারা যাত্রী নিয়ে ওইসব সড়কগুলোতে যেতে চান না, গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে অতিকষ্টে যান। এতে যাত্রীদের সাথে প্রায়ই বচসা হয়। তারা সব সময় চেষ্টা করেন শহরের মূল সড়কগুলোতে চলাচল করতে। এতে, দৈনিক রোজগার কম হলেও গাড়ি ভাল থাকে।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন বলেন, বিগত পরিষদের সময় পৌর এলাকার কোথাও কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। এ কারণে অনেক কাজই বর্তমান পরিষদ করতে শুরু করে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সড়ক ও ড্রেনের কাজ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি শেষ হলেই ভাংগাচূড়া সড়ক ও ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে কাগমারা এলাকার ড্রেনের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সড়কের কাজও শুরু করা হয়েছে।