
টাঙ্গাইলে ভর্তি জালিয়াত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা সহ সংঘবদ্ধ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন(র্যাব)। একইসাথে তাদের হাতে অপহৃত এক ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, মূলহোতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ও নোয়াখালী জেলার সুধারামপুর থানার এওজবালিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন রোকন(২৬), তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন রুবেল(২৭), টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কাটালিয়া আটা গ্রামের আক্তারুজ্জামান খোকন(২১) ও শ্যামলী মাস্টার পাড়ার জাকারিয়া সরকার(২২)।
শনিবার(২২ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানী কমান্ডার বীণা রানী দাস জানান, সংঘবদ্ধ চক্রটি টাকার বিনিময়ে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া পরীক্ষার্থী সেজে পরীক্ষা দিয়ে ছাত্র ভর্তির কাজ করে আসছিল। ভর্তির পর কোন প্রার্থী চুক্তি মোতাবেক টাকা দিতে না পারলে তাদের অপহরণ করে মুক্তিপণের মাধ্যমে টাকা আদায় করতো তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার খিলগাতী গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে সালেহ সৌরভ দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ওই জালিয়াত চক্রের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে তিনি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগও পান সালেহ সৌরভ। কিন্তু সৌরভ ভাল বিষয়ে সুযোগ না পাওয়ায় ভর্তি হতে অস্বীকৃতি জানান। চুক্তি মোতাবেক চার লাখ টাকা দিতে না পারায় জালিয়াত চক্র গত ১৫ এপ্রিল টাঙ্গাইল সদর উপজেলা থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি সৌরভের বাবা জানতে পেরে র্যাবকে অবহিত করেন। র্যাব অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার ও সৌরভকে উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করে।
শুক্রবার(২১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার নিউমার্কেট থানা এলাকার নীলক্ষেত থেকে মুক্তিপণ নেয়ার সময় ভর্তি জালিয়াত চক্রের অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার ও অপহৃত সৌরভকে উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে প্রথমে তারা মূল মার্কশীট, সার্টিফিকেট ও প্রবেশ পত্রের মূল কপি নিয়ে নেন। এরপর ফরম পুরণের আইডেন্টি ফিকেশন নাম্বার সংগ্রহ করে প্রবশেপত্র ডাউনলোট করে ফটোসপের মাধ্যমে প্রবেশপত্রের ছবি পরিবর্তন করে একজন মেধাবী ছাত্র দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করায়। এর বিনিময়ে ছাত্রদের কাছ থেকে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত তারা নিয়ে থাকেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।