
টাঙ্গাইলে হিন্দু দম্পতির মরদেহ উদ্ধার
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে বাড়ির কূপ থেকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে হিন্দু দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার(২৬ জুলাই) রাতের কোন এক সময় তাদেরকে শ্বাসরোধে খুন করে বাড়ির কূপে ফেলা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। নিহতরা হচ্ছেন, রসুলপুর বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক অনিল চন্দ্র দাস (৬৫) ও তার স্ত্রী কল্পনা রাণী দাস(৫৫)।
গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজকুমার সরকার, সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ও আতোয়ার রহমান, ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ সহ স্থানীয়রা জানায়, রসুলপুর বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অনিল চন্দ্র দাসের পরিবার রসুলপুরের অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত ও মিশুক পরিবার হিসেবে পরিচিত। ওই পরিবারের এক ছেলে ঢাকায় একটি ব্যাংকে চাকুরি করেন আর মেয়ে আমরিকা প্রবাসী, দু’জনই বিবাহিত। এলাকার কারো সাথে তাদের কোন শত্রুতা নেই। অনিল চন্দ্র দাস সম্প্রতি বাড়িতে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করছিলেন। ভবনের কাজ শেষ পর্যায়ে। ওই ভবনের নিচতলায় স্বামী-স্ত্রী বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে এনজিও কর্মী দীপক কুমার দাস ও পলাশ সরকার বাড়ির ভিতরে গিয়ে কোন লোকজন দেখতে না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রাজকুমার সরকারকে মোবাইলে খবর দেন। খবর পেয়ে চেয়ারম্যান এসেও কাউকে না পেয়ে বিষয়টি মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) গোবিন্দ চন্দ্র ভৌমিক, ওসি নাজমুল হক ভূইয়া সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির আশপাশে খুঁজতে গিয়ে একটি পরিত্যক্ত কূপের ভিতর অনিল ও তার স্ত্রী কল্পনার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতি করতে এসে দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় স্বামী-স্ত্রীকে খুন করে মরদেহ গুম করার জন্য বাড়ির কূপে ফেলে দেয়া হয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে শ’ শ’ নারী-পুরুষ অনিল চন্দ্র দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রাণী দাসকে এক নজর দেখার জন্য ভির করে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত অনিল কুমার দাসের ছোট ভাই কবি স্বপন সৌমিত্র দাস বলেন আমার ভাই ও বৌদি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। তাদের হত্যা করতে পারে এমন কোন শত্রু আমার জানা মতে নেই। নিহত দম্পতির একমাত্র ছেলে নির্মল কুমার দাস ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরিরত এবং একমাত্র মেয়ে অঞ্জনা দাস আমেরিকা প্রবাসী।
টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হক ভূইয়া জানান, স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতরা ডাকাতি করতে এসে কাঙ্খিত টাকা-পয়সা না পেয়ে এবং দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় শ্বাসরোধে হত্যা করে বাড়ির পরিত্যক্ত কূপে ফেলে রেখে চলে যায়।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) গোবিন্দ চন্দ্র ভৌমিক জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।