
পাকিস্তান না ভারত?
ক্রীড়া প্রতিবেদক: কেনিংটন ওভালের ঘাস সমানভাবে কাটা হচ্ছে। অন্যদিকে বিশাল মাঠের বুকে বিজ্ঞাপনের ছবি আঁকছেন তিন-চারজন। ফাইনাল ম্যাচ বলে কথা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেরা দুটি দল লড়বে। তাই মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। হঠাৎ সরফরাজ ও বিরাট বেরিয়ে এলেন। ট্রফি নিয়ে দুই অধিনায়কের ছবি তোলা হবে। বিরাটকে প্রথমে ট্রফি দেওয়া হলো। তিনি সরফরাজকে এগিয়ে দিলেন। সরফরাজ নিতে চাইলেন না। ভাবখানা এমন, আগামীকাল লড়াই করে নেব!
অবশেষে জনাকয়েক ফটোগ্রাফারের সামনে কাষ্ঠহাসি ফুটিয়ে তুলে দুই অধিনায়ক ট্রফি নিয়ে ছবি তুললেন। মনের মাঝে বয়ে চলেছে ঝড়। সেটি আড়াল হলো না ফটোসেশন শেষে। বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণীয় ফাইনাল হতে যাচ্ছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল বলে কথা। তার ওপর যদি হয় ভারত-পাকিস্তান তা হলে তো বাড়তি উত্তেজনা যোগ হবেই। প্রবল পরাক্রমশালী ইংল্যান্ড ফাইনালে নেই। এ যেন নিজভূমে পরবাসী! দর্শক হয়েই থাকছে থ্রি-লায়ন্সরা।
ভারত-পাকিস্তানের লড়াই নাকি এখন মেকি হয়ে গেছে। ভারতের জমাট ব্যাটিং লাইন আপ সবাই জানে। এই আসরের মাঝে হঠাৎ সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো উদ্গিরিত হয়েছে পাকিস্তানের হারিয়ে যাওয়া বোলিং। এ জন্যই লড়াইটা জমজমাট হওয়ার কথা। আবার ইতিহাস ও পরিসংখ্যান দুই দলকে বেঁধেছে এক সুতোয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৪টি ম্যাচ খেলেছে প্রতিবেশী দুই দেশ। সমান দুটি করে জয় তাদের। আজ এগিয়ে যাওয়ার পালা। অবশ্য সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪টিতে ভারত জিতেছে। সম্প্রতি রেকর্ড আর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পাকিস্তান দুই-ই সমান ব্যাপার। আবার উল্টো করে বললে, ভারতের এই ব্যাটিং লাইনআপকে ডিঙিয়ে ম্যাচ জয় অলীক ব্যাপার।
আইসিসি স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটসম্যান-বোলারদের মাথা দিয়েই খেলতে হয়। সেটি হলেই জয়ভাগ্য দুয়ার খোলো! পাকিস্তানের মূল শক্তি ফাস্ট বোলাররা। এই আসরে বোলিং নিয়ে পাকিস্তান বেশ নির্ভার। সেমিফাইনালে মোহাম্মদ আমির ইনজুরিতে ছিলেন। ফাইনালে অবশ্য খেলতে পারেন। এ ছাড়া হাসান আলি ও জুনায়েদ খান বোলিংয়ে বৈচিত্র্য এনেছেন। ঢাকায় বিপিএল খেলা বাঁ-হাতি পেসার রুম্মন রইস সেমিফাইনালে ভালো করেছেন। তারপরও কপাল পুড়বে আমির খেললে।
২০১৫ সালে ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বিদায় নেয়। পরের বছর ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও শেষ চারে বিদায় নেয় বিরাট কোহলিরা। এবার আইসিসির আরেকটি ইভেন্টের ফাইনাল। এজবাস্টনের সেমিফাইনালে তারা বাংলাদেশকে সহজে হারিয়েছে। পাকিস্তান স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে বিদায় করে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে এসেছে।
ফাইনালে ভারতীয় দলে কোনো পরিবর্তনের আভাস নেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে দল খেলেছে সেটিই আজ খেলতে পারে। পাকিস্তান দলে পরিবর্তন বলতে আমির দলে প্রবেশ করতে পারেন। ফাইনাল নিয়ে ভারত অধিনায়ক বললেন, আমি অনেক রোমাঞ্চিত। দিন শেষে আমরা ভালো ক্রিকেটের প্রত্যাশা করি।
সরফরাজ জানালেন ফেভারিটের তকমা আমাদের দিকে নয়। এই আসরে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তান একতরফা হেরেছে ভারতের কাছে। আজ আবার মুখোমুখি ফাইনালে। বৃষ্টির বাগড়া ছিল টুর্নামেন্টজুড়ে। অবশ্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। পরের দিনও খেলা হবে। প্রস্তুত দুপক্ষই। দেখা যাক কার ভাগ্যের শিকা ছিঁড়ে।