
বেলকুচিতে ইরি ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : যমুনার কোলঘেষা সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ইরি ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনও পাকা ইরি-বোরো ধান বন্যার পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় উপজেলায় তেমন ক্ষতি হয় নি। অন্যান্য এলাকার চাইতে বেলকুচি উপজেলায় ধান কাটা একটু দেরি করেই কাটা এবং মাড়াই শুরু হয়। এখন বেলকুচি উপজেলার কৃষকরা আনন্দের সহিত ইরি ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছে। ইরি ধানের মাঠ এখন পাকা ধানের সোনালী হাসি । উজ্জল রোদে সেই হাসি আরো ঝলমল করে উঠছে । অনেক মাঠেই কৃষক কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন। শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত উপজেলার রাজাপুর, দৌলতপুর, ভাঙ্গাবাড়ী, বড়ধুল ও ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নে এবছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে আবার দামও ভালো। যা এসব ইউনিয়নের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বিক্রি করতে পারবে। এতে করে কৃষকের মন ভরে উঠেছে আনন্দে।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি ইরি মৌসুমে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে বেশ লাভের আশা করছে কৃষকরা। কৃষকদের নিকট থেকে জানা যায়, এবার প্রতি বিঘা ইরি চাষে সাড়ে ছয় হাজার থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে তবে এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে বলে কৃষকরা জানান । উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে অনেকটা লাভের আশা করছেন তারা ।
এদিকে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা জানান, বর্তমানে ক্ষেতে পাকা ধান থাকতেও আমরা বৈরি আবহাওয়ার কারণে ধান কাটা এবং মাড়াই নিয়ে শংকাবোধ করছি। এর মধ্যেও মাঝে মধ্যে ধানের ক্ষেতে কাস্তে ধরি। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ধান কাটা এবং মাড়াই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের কৃষক আল আমিন, লুৎফর রহমান, গোবিন্দ সরকার, রহিম উদ্দিন, ওমর আলী (শিক্ষক) জানায়, প্রতি বিঘায় গড়ে ইরি ধান ২২ থেকে ২৪ মন ফলন হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতি মণ ধান সরকারি ভাবে বাজার দর বেধে দিয়েছে ৯৫০ টাকা এবং বাজারে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এ বছর চলতি ইরি মৌসুমে শুধু বেলকুচি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে সর্বমোট ৭ হাজার ৭শ ৯০ হেক্টর জমি চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইরি ধান দেশের খাদ্য চাহিদা পুরনের প্রধান ভূমিকা রাখে। তাই এবারো কৃষকরা মাঠের ফসলি জমির প্রতি যত্নশীল হয়েছিল। সে কারণে ভালো ভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।