
বেলকুচিতে ঈদ আনন্দে নতুন মাত্রা : যমুনাতে নৌকা বিলাশ
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ঈদ আনন্দ এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে যমুনার তীরবর্তী নৌকা বিলাশ ও এনায়েতপুর খাজা মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল। ঈদের দিনটিকে আনন্দময় করতে মানুষ নানা আয়োজনে নানা উদ্যোগে নিজেদের মাতিয়ে রাখে। কেউ যায় সমুদ্র সৈকতে, কেউ পার্কে, কেউ যায় স্বজনদের বাড়িতে, কেউ বা আড্ডায় মেতে থাকে। বেলকুচি ও চৌহালী, এনায়েতপুরে অনেক মানুষ ঈদের দিন ঘুরতে যায় যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। ঈদের বিকেলে থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় জমিয়েছে লোকজন। বিকালে হাজারো নারী-পুরুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। এনায়েতপুর যমুনা স্পার ও বেতিল স্পার বাঁধ। ঈদের দিন থেকে সেখানে বিনোদন পিপাসু মানুষের ঢল নেমেছে।
বিশেষ করে যমুনা তীরে নির্মিত আন্তর্জাতিক মানের খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং ইন্সটিটিউশন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবং যমুনার পাশেই দৃষ্টি নন্দন কারুকাজ খচিত খাজা এনায়েতপুরীর মাজার দেখতে সারা বছরই ভক্তবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের লাখো মানুষের ঢল ঈদে ভ্রমন পিয়াসুদের পদচারনায় মুখরিত হয় পুরো এলাকা।
এবার ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে অনেকেই এসেছেন এনায়েতপুর স্পারে বেড়াতে। সোমবার বিকেলে সরেজমিন দেখা গেছে ভ্রমন পিপাসুদের উপচে পড়া ভিড়ে কোথাও দাড়ানো যায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে যমুনায় ছোট ছোট নৌকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই ভ্রমনে বেড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেকেই বন্ধুদের নিয়ে যমুনা তীরে চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষের কোলাহল দেখা যায়।
সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি, চৌহালী উপজেলা ও এনায়েতপুর থানায় কোন বিনোদন কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় সব বয়সের মানুষের কাছেই যমুনা তীরে বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ থেকেই যায়। বিভিন্ন উপজেলাসহ বাহিরের জেলা থেকে সড়ক পথে মাইক্রোবাস, পিকআপ ও সিএনজি এবং নৌ পথে ট্রলারে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ঢং সেজে সব বয়সের মানুষদের আসতে দেখা যায়। তাছাড়া প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে নৌকা যোগে পিকনিক করতে বেলকুচি উপজেলা ও এনায়েতপুর থানার যমুনা তীরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পেশাজীবিদেরকেও দেখা যায়।
শুধু বেলকুচি উপজেলা থেকে নয়, সিরাজগঞ্জ সদর, চৌহালী উপজেলা, এনায়েতপুর থানা, শাহজাদপুর উপজেলার উত্তরাঞ্চলের পাবনা, নাটোর, গুরুদাসপুর, চাটমোহর, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা সহ অন্যান্য উপজেলা থেকে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, নছিমন-করিমন নিয়ে আসে মানুষ। বেলকুচির উপজেলার রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য কোনো জেলায় কর্মরত চাকুরীজীবিরা গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে এসে ঈদ আনন্দ করেছে বেতিল বেড়িবাঁধ ও ইকেপার্ক এবং খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল এবং খাজা এনায়েতপুরী মাজার দেখতে। ঈদে লোকজনে আগমনকে কেন্দ্র করে সেখানে ভ্রাম্যমাণ নানা ধরনের খাবারের দোকান বসেছে। বিকালে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে কিছু খাওয়া-দাওয়া ঈদে নতুন আনন্দ নতুনমাত্রা বয়ে আনে। বন্ধু-বান্ধবও আসেন জোট বেঁধে এখানে আড্ডা জমাতে। ঈদে বেতিল বেড়ি বাঁধ এলাকায় শাহজাদপুর থেকে আসে ছোট বয়সী আশামনি ও কলিমনি জানান, ঈদে যমুনা পাড়ে বেড়াতে আসা যেন অন্যরকম আনন্দ।
কলিমনি জানান, “নৌকায় যমুনা নদীতে ঘোরা আর নদীর ওপার চর এলাকার কাঁশবন দর্শন এবং নৌকায় চরে ভ্রমন করার মজাটাই আলাদা। আর চরের মধ্যে ঘোরাঘুরি যেন অন্যরকম আনন্দ।”