
বেলকুচিতে জলমহালের ইজারা নিয়ে ধুম্রজাল
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির জলমহাল ইজারা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
ইজারা সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলাধীন নিন্মে উল্লেখিত জলমহাল ১৪২৪ বাংলা সন হতে ১৪২৬ সন পর্যন্ত অর্থাৎ ৩ বছর মেয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ১৮ জানুয়ারী ২০১৭ তারিখ স্বাক্ষরিত তামাই পুকুর, তেয়াশিয়া পুকুর ও গুমুর্কী বিল নামে জলমহালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ থাকে যে, মৎস্যজীব সমবায় সমিতির নিবন্ধন ব্যতিত কোন ব্যক্তিরা ইজারা প্রদান করতে না। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন পত্রের বাক্স খোলার তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি-২০১৭ এবং সময় বিকাল ৩ ঘটিকা। কিন্তু প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন পত্রে ত্রুটি পূর্ণ এবং অসমাপ্ত থাকার কারণে প্রথম জলমহালের বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করে পূনরায় আরেকটি জলমহাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ থাকে, তেয়াশিয়া পুকুর ও গুমুর্কী পূকর। আবেদনপত্রের বাক্স খোলার তারিখ ও সময় ১৫ মার্চ, ২০১৭ এবং সময় বিকাল ৩ ঘটিকা।
প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে তেয়াশিয়া পুকুরটি নেওয়ার জন্য ৪জন আবেদন করে। আবেদনকৃতরা হলেন, তেয়াশিয়া গ্রামের চাঁন মিয়া সরকারের ছেলে ওমর ফারুক, তপন কুমার সরকার ছেলে উত্তম কুমার সরকার, আঃ রশিদ আকন্দের ছেলে রেজাউল করিম এবং মৃত খোকা মন্ডলের ছেলে হাফিজ মন্ডল।
দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৩জন আবেদন করে। আবেদনকৃতরা হলেন, তামাই গ্রামের কোরিয়ান নান্নুর ছেলে আব্দুল হান্নান ও উপজেলা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ আব্দুল মজিদ শেখ, তেয়াশিয়া গ্রামের মৃত ইয়াছিন প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল মালেক প্রামাণিক, তেয়াশিয়া গ্রামের মৃত গফুর মাষ্টারের ছেলে ইকবাল হোসেন।
উপজেলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আঃ হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ জানান, তেয়াশিয়া পুকুরটির সর্বচ্চো দরদাতা ছিলেন তেয়াশিয়া গ্রামের চান মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক। এখানে প্রকৃত মৎস্যজীবি ও সনদধারীরাই জলাশয়টি পাবে। আবেদনের সঙ্গে জেলা সমবায় কার্যালয়ের সনদ এবং উপজেলা সমবায় অফিসার এর স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে আবেদন করে।
আবেদনকারী তেয়াশিয়া গ্রামের চাঁন মিয়া সরকারের ছেলে ওমর ফারুক বলেন, প্রথম বিজ্ঞপ্তির সর্বোচ্চ দরদাতা আমি হই। কিন্তু কোন কাগজপত্র না থাকার অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু বর্তমান প্রথম বিজ্ঞপ্তিটির মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি না থাকায় সর্বচ্চো দরদাতা হয়েও আমি পুকুরটি পাইনি। কিন্তু তেয়াশিয়া গ্রামের মৃত ইয়াছিন প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল মালেক মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি না থাকা সত্বেও পুকুরটি নিয়ে কোন এক কুচক্রি মহল পায়তারা করছে। কিন্তু মৎস্য অফিসার বলেছিলেন, আমরা যে সমিতি করে দিয়েছি সেই অনুযায়ী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি করতে হবে এবং তাদের নিবন্ধনকৃত হতে হবে। তা না হলে এ কাগজের কোন গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে না। ঠিক একই কথা সমবায় অফিসারও বলেছিলেন।
বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক দেখা যায়, প্রথম বিজ্ঞপ্তি তেয়াশিয়া মৌজা ও জেল এল নং-১০৫, আর এস দাগ নং-৮৮১, আয়তন (একর)-২.১১, সম্ভাব্যমূল্য-৮৮,২০০টাকা, পূণরায় জলমহাল বিজ্ঞপ্তিতে-তেয়াশিয়া মৌজা ও জেল এল নং-১০৫, আর এস দাগ নং-৮৮১,আয়তন (একর)-২.১১, সম্ভাব্যমূল্য-৮৮,২০০টাকা। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেবক বাক্স খোলার তারিখ ও সময় নির্ধারণ থাকলেও এখন পর্যন্ত কে বা কারা তেয়াশিয়া পুুকুরটি পেল তার হদিস মিলছে না। এ নিয়ে আবেদনকারীদের মধ্যে হতাশা ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।