
বেলকুচিতে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয়
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে বেলকুচিতে সবুজ পাতার ফাঁকে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। বৈশাখে একদিকে ঝড় হাওয়া অপদিকে তপ্ত হাওয়ার মধ্যেও সোনাঝরা ধানের শীষগুলো উঁকি দিচ্ছে বার বার। রোদেলা বাতাসে ভাসছে গোছাভরা ধানের দোল খাওয়ার শন শন শব্দ। এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে ধান কাটা মাড়াই। এবার বোরো ধানের সরকার অগ্রিম মুল্য নির্ধারণ করাই খুশি সিরাজগঞ্জ জেলার অঞ্চলের কৃষকরা। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বাজারে ধানের দাম কিছুটা হলেও বাড়বে বলে মনে করছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
সেই আশায় বুক বেঁধেছেন তারা। চলতি বছর ২৪ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয় করবে সরকার। সে হিসাবে ধানের মণ (৪০ কেজি) ৯৬০ টাকা আর চাল প্রতি মণ (৪০ কেজি) ১ হাজার ৩২০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগামী ২ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ নির্ধারিত দামে সারাদেশে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সাত লাখ টন ধানও আট লাখ টন চাল ক্রয় করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছে। বোরো কাটার আগেই সরকারের এমন ঘোষণার নির্ধারিত দামে ধান-চাল বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে বলে কৃষিবিদ ও কৃষি স¯প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়।
সিরাজগঞ্জ জেলায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, জেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল। এর মধ্যে বেলকুচিতে ৭ হাজার ৪৯০ হেক্টর, রায়গঞ্জে ২২ হাজার ১৫৫ হেক্টর, তাড়াশে ২২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, উল্লাপাড়ায় ২৯ হাজার ৩৩০ হেক্টর, শাহজাদপুরে ২২ হাজার ৫০ হেক্টর, কামারখন্দে ৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টর, চৌহালিতে ২ হাজার ৮৩৪ হেক্টর, সদরে ১৩ হাজার ৭১৫ হেক্টর, কাজীপুরে ১২ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে।
প্রান্তিক কৃষকদের নিকট চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গ্রীস্মকালীন সময়ে অবিরাম বৃষ্টিপাত, ঝড়ো হাওয়া এবং ক্ষেত্রের ভিতর পানি জমে পড়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা মোটেই সম্ভব হচ্ছে না। তারা আরও জানান, রোদের অভাবে এবার আমরা ধান ঘরে তুলতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে আমাদের মধ্যে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র জানিয়েছে প্রয়োজন মতো সার সরবরাহ করা হলেও, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও আবহাওয়া অনুকুল না থাকার কারণে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।