
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সোমবার(১২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সোসাল সায়েন্স অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল ইসলাম।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়কে সম্মান জানিয়ে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর ভাসানীর স্মৃতি বিজড়িত টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাঁরই নামে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরর্তীতে ২০০১ সালের ১২ জুলাই মহান জাতীয় সংসদে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ পাস হয়। বিগত ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পার হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ জন ভাইস-চ্যান্সেলর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২ জন ভাইস-চ্যান্সেলর মেয়াদ পূর্ণ করে নিজ কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। সর্বশেষ ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন গত ৩ মে ২০১৭ তারিখে নিয়োগের মেয়াদ ৪ বছর পূর্ণ করে তাঁর স্বীয় কর্মস্থলে ফিরে যান। এমতাবস্থায় ৪ মে ২০১৭ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ১ মাস ৯ দিন যাবৎ বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি শূন্য রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ না হওয়ায় বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রমসহ প্রায় সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া ছাড়া অন্যান্য কার্যক্রম যেমন- পরীক্ষা গ্রহণ, পূর্বে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য দেশ-বিদেশ গমন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমসহ সকল কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। ১৯৭৩ সালের আইনে প্রতিষ্ঠিত পুরাতন কয়েকটি বিশ^বিদ্যালয় ব্যতীত পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়গুলোর আইনানুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমের অধিকর্তা এবং ভাইস-চ্যান্সেলর ছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমই সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ভূমি সংকটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনসহ নানা সমস্যা বিরাজমান রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড়যুগ পার করলেও এখনো কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ। বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩টি প্রকল্পের কার্যক্রম সমাপ্তির পর সর্বশেষ ভাইস-চ্যান্সেলরের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় চারশ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর পদটি শূন্য থাকায় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
এমতাবস্থায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সৎ, যোগ্য ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী একজন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার নিরসন করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এএসএম. সাইফুল্লাহ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. পিনাকী দে, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোষ্ট ড. এ.মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।