
ভূঞাপুরে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়মের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিবেদক, জাগ্রতবাংলা ২৪ ডটকম : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে নাম মূল্যে দলিল তৈরি ও জাল কাগজপত্র তৈরী করে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার তথ্য ভূঞাপুর পৌরসভা তাদের অনুসন্ধানে বের করেছেন। এছাড়া দানপত্র দলিল, হেবা দলিলের ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা আদায় করছে কর্তৃপক্ষ।
সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুর দলিল লেখক সমিতির লোকজন দীর্ঘদিন যাবৎ সাব রেজিস্ট্রি অফিসার ও অফিস সহকারিদের যোগসাজসে জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল কাগজ তৈরী করে বছরে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর মাসে বাহাদীপুর মৌজার ১৯১৪ নং দলিলে ২০ শতাংশ জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সাব কবলা দলিল করে। যার প্রকৃত মূল্য ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৭শ টাকা। জমির শ্রেণি বাড়ী পরিবর্তন করে নামা শ্রেণির জাল পড়চা তৈরী করে দলিল মূল্য তুলেছেন ২ লক্ষ টাকা।
ফলে দলিলে জমির মূল্য ১১ লক্ষ ৭২ হাজার ৭শ টাকা কম তুলে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ভূঞাপুর মৌজায় ১৮০৮ নং দলিলে ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার ৩০৭ টাকার স্থলে ১১ লক্ষ ১৫ হাজার, ১৮০৯ নং দলিলে ২৩ লক্ষ ৯ হাজার ৬শ ৭০ টাকার স্থলে ৮ লক্ষ ৮০ হাজার, ২৮/৮/১৬ তারিখে ২০৩২ নং দলিলে ৬ লক্ষ ৫৪ হাজার ২শ ৩০ টাকার স্থলে ১ লক্ষ ৩০ হাজার, ২৫/৯/২০১৬ তারিখে ২২০৮ নং দলিলে ১৭ লক্ষ ৩২ হাজার ২শ ৫২ টাকার স্থলে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা মূল্য ধরে দলিল লিপিবদ্ধ করেন। যা একমাসে শুধু পৌরসভার মধ্যে একজন দলিল লেখক ৭৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ১শ ৫৯ টাকা কম মূল্য তুলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। শুধু পৌরসভা নয় একই ভাবে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নের জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল কাগজপত্র তৈরী করে দলিল মূল্য কম দেখিয়ে বছরে সরকারকে প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়াও দলিল হওয়ার পর অফিসের সেরেস্তার জন্য সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারিদের দিয়ে রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা দলিল গ্রহীতাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায় করা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে ভূঞাপুর সাব রেজিস্টার ও দলিল লেখক সমিতির দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে।
একাধিক দলিল লেখক জানান, গুরুত্বপূর্ণ কিছু দলিলের রাজস্ব পুনরায় জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে সে তুলনায় খুবই কম।
অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে ভূঞাপুর সাব রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মনিষা রায় বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল হয়েছে সেটা আমি দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে। কিছু টাকাও পুনরায় সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অফিসের বাইরে কেউ হয়তো অনিয়ম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে কর্মকর্তা ভাঙিয়ে অবৈধভাবে টাকা নিতে পারে।