
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি হিসাবে ড. বিশ্বজিৎ ঘোষকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১১ জুন রোববার এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ দিন সন্ধ্যায় এ খবর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এসে পৌছে। মুহুর্তে উপজেলার সর্বত্র আনন্দ উল্লাসে ফেটে পড়ে এলাকাবাসি। তারা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান।
ড.বিশ্বজিৎ ঘোষ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। তাকে আগামী ৪ বছরের জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে এর পূর্বেই এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। এ প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৬ এর ১০(১) ধারা অনুযায়ী তাকে এ নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে যাবতিয়কার্যাদি পালন করবেন।
জানা গেছে এটি দেশের ৩৮তম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৫ সালের ৮মে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫তম জন্মজয়ন্তী জাতীয় ভাবে উদযাপন উপলক্ষে শাহজাদপুর হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ’ এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত বিল পাশ হয়।
এ বিশ^বিদ্যালয়ে বিশ^কবির জীবন ও দর্শন,সাহিত্য ও সঙ্গীত এবং বিশ^সংস্কৃতি বিষয়ে অধ্যায়ন ও গবেষণা,কলা, সঙ্গীত ও নৃত্য, চারুকলা, নাট্যকলা, সামাজিক বিজ্ঞান, কৃষি ও সমবায়, ব্যবসা প্রশাসন, আইনবিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা দান ও গবেষণা হবে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম সার্ধশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেস্বাক্ষরিত যৌথ ইশতেহারে বাংলাদেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে(ইউজিসি) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সরকারী চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
জানা গেছে, দেশের ৩৫ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্থাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথ ভাবে এর অর্থায়ন করছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার পৈতৃক জমিদারি দেখাশোনা করতে ১৮৯০ সালে শাহজাদপুরে আসেন। সে সময় তিনি শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িতেই অবস্থান করতেন। তার ব্যবহৃত তৈজসপত্র নিয়ে এখানে তার একটি স্মৃতি জাদুঘর রয়েছে। তার এই শাহজাদপুরের স্মৃতিকে আরো স্মরণীয় করে ধরে রাখতে শাহজাদপুরবাসির দীর্ঘদিনের দাবী অনুযায়ী সরকার এখানে তার নামে এবং তার জমিদারির নিজস্ব জমিতেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।