
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ফের অস্থিরতা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে মূল ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ মে) স্কুলটিতে অস্থিরতা দেখা দেয়। এতে করে গতকাল থেকে বিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আজ সকালে ক্যাম্পাস আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠে।মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহসীন আলী ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে নতুন করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে অ্যাডহক কমিটি। এদিকে নতুন প্রধান শিক্ষককে অবৈধ ঘোষণা করে শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে নোটিশ দিয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক। নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষকরা। এ অবস্থায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, আদালতের রায়ে এত দিন প্রধান শিক্ষক হিসেবে জাকির হোসেন দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জাকির হোসেনকে অব্যাহতি দিয়ে সহকারী শিক্ষক আখলাক হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করলে বুধবার (১৭ মে) বিকেলে বহিরাগতদের দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ২০ জন শিক্ষক আহত হন।
শিক্ষকরা জানান, জাকির হোসেনকে বাদ দিয়ে বুধবার (১৮ মে) নতুন করে একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় সব শিক্ষক ক্লাস বর্জন করেছেন। গতকাল ও আজ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এখনও পরিস্থিতি থমথমে। স্কুলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষকরা জানান, নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পর বুধবার অ্যাডহক কমিটিপন্থি শিক্ষকরা মূল ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। আজ সকাল থেকে তারা আবার ওই ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বর্তমান প্রধান শিক্ষকপন্থি শিক্ষকরা শেওড়াপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।
এদিকে, নতুন প্রধান শিক্ষককে অবৈধ দাবি করে শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য পাল্টা নোটিশ দিয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন। এতে বলা হয়েছে, অ্যাডহক কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আখলাক আহমেদ দায়িত্ব দিয়ে যে নোটিশটি জারি করেছেন তা বিধি সম্মত নয়। কারণ তিনি উক্ত নোটিশ জারি করার আইনগত অধিকার রাখেন না। বিভ্রান্তিমূলক নোটিশটি আমলে না নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ করেন জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকালে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে আমাকে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাই মন্ত্রণালয় আমাকে অব্যাহতি দিতে পারে। এর বাইরে কারও অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু অ্যাডহক কমিটি আখলাককে নিয়োগ দিয়েছে। আমি স্কুলের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য যা যা করার তাই করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, অ্যাডহক কমিটির এমন কাজের এখতিয়ার নেই। স্কুলের বিষয় আমরা নজর রাখছি।