
লুটপাট টিকিয়ে রাখতে সরকার দেশে গুম-খুনের সংস্কৃতি চালু করেছে : তরিকুল
যশোর প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করছে। প্রতিনিয়ত ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এই টাকা দিয়ে আগামী নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এদেশের জনগণ সেই সুযোগ দেবে না।
বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমান সরকার দশ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা বলে ক্ষমতায় এসে ৬০ টাকা দরে চাল কিনতে বাধ্য করছে জনগণকে। এসব কর্মকাণ্ডের যাতে প্রতিবাদ না হয় এজন্য দেশে গুম আর খুনের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদেরকে সংগ্রাম করে বাঁচতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেই বাঁচার সংগ্রামের অংশ হিসেবে সদস্য সংগ্রহের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আমাদের এই মুহূর্তের কাজ হচ্ছে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত এই কর্মসূচি সফল করা।’
আজ বৃহস্পতিবার যশোর প্রেসক্লাবে জেলা বিএনপি আয়োজিত ‘প্রথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তরিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সরকার জনগণকে ত্যাজ্য করে পুলিশ নির্ভর হয়ে টিকে আছে। এখন দেশে এমন এক দুশাসন চলছে-যেখানে কথা বলা যাবে না, সমাবেশ করা যাবে না। কিন্তু এভাবে দেশ চলতে পারে না।
তিনি বলেন, সময় থাকতে ক্ষমতা থেকে নেমে নির্বাচন দিন। তা না হলে পরিণতি সুখকর হবে না। আশা করি শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। শুভ বুদ্ধির উদয় হলেই নিস্তার পেতে পারেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ভয় পাওয়ার রেকর্ড শেখ হাসিনার, খালেদা জিয়ার নয়। ওয়ান ইলেভেনে মাইনাস টু ফর্মুলার সময় তিনিই ছেলের কাছে চলে গিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া দেশ, জনগণ, মাটির টানে হিমালয়ের মতো অটল ছিলেন। বন্দুকের নলও তাকে টলাতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘হাসপাতালে আপনার অসুস্থ স্বামীকে দেখতে যাননি বলে কি বেগম খালেদা জিয়া তার সন্তানকে দেখতে যাবেন না? তাহলে এ নিয়ে এত বানোয়াট কথা কেন?’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা জানেন তিনি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবেন না। তা জোর জবরদস্তি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। কিন্তু আগামী নির্বাচন এভাবে করতে চেষ্টা করবেন না। জনগণ আপনাকে সেই কাজ করতে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার অগণতান্ত্রিক শক্তির জোরে দেশে গুম আর খুনের সংস্কৃতি চালু করেছে। নতুন রূপে আমাদের সামনে বাকশাল হাজির হয়েছে। এখান থেকে দেশকে উত্তরণের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন এদেশে আর হবে না। ৫ জানুয়ারি বার বার ফিরে আসবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে জনগণই বাধ্য করবে।
আওয়ামী লীগ প্রায় ষড়যন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু এই ইতিহাস তাদেরই। ’৭১ সালের পর থেকে এই দলটি বার বার যেসব ষড়যন্ত্র করেছে দেশবাসীর তা জানে। নতুন করে আর বলা লাগবে না। বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে। তবে অবশ্যই শেখ হাসিনার অধিনে নয়। আন্দোলনের মধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি আদায় করে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। বিএনপির যশোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল হুদার সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন। এবার যশোরে দুই লাখ সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে ‘প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জেলা কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেয়।