
যমুনা নদীতে আকষ্মিক পানি বৃদ্ধি
শাহজাদপুরে ২ হাজার বিঘা জমির পাঁকা ধান ডুবে গেছে:কৃষক দিশেহারা
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ : ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর এলাকা সহ ১৩ টি ইউনিয়নের নিচু এলাকায় আকষ্মীক বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে এ উপজেলার নিচু এলাকার প্রায় ২ হাজার বিঘা জমির উঠতি পাঁকা ইরি-বোরো ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে এ অঞ্চলের কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে,গত ৩দিন ধরে শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা, করতোয়া, বড়াল, গোহালা, ধলাই, সোনাই,বলেশর, হুড়াসাগর ও চাকলাই নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে উপজেলার পৌর এলাকা সহ ১৩ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ জমির পাঁকা ইরি-বোর ধান এ বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
শনিবার দুপুরে পোরজনা ইউনিয়নের রাণীখোলা, উল্টাডাব, বাচড়া, মহারাজপুর, শ্রীফলতলা, বাঐখোলা, নন্দলালপুর, জগারবাড়িয়া, পুঠিয়া, চিথুলিয়া, নগরডালা, বেতকান্দি, ঘোড়শাল, জামিরতা, বাশুরিয়া, ভূলবায়রা, হাটবায়রা, ধীতপুর, পোতাজিয়া, কায়েমপুর, কাশিপুর, লহিন্দাকান্দি, বানতিয়ার, দাদপুর সহ অর্ধশতাধিক গ্রামের ২ হাজার বিঘা জমির পাঁকা ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ সব ডুবে যাওয়া ধান কৃষকরা বুক পানিতে নেমে কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। এ সব ধান কাঁটার শ্রমিক না পেয়ে স্কুল-কলেজের ছাত্ররা ধান কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। রাণীখোলা ও উল্টাডাব গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাবুল মিয়া জানান, ডুবে যাওয়া তার দুই বিঘা জমির ধান কাটার শ্রমিক পাননি। তাই নিরুপায় হয়ে তার ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে শিমুলকে স্কুেল না পাঠিয়ে সাথে নিয়ে ডুব যাওয়া পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে বাধ্য হয়েছেন।
এ গ্রামের আনোয়ার হোসেন তার ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে সিজানও কলেজে পড়ুয়া ছেলে আলামীন কে নিয়ে ৩ বিঘা জমির পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
এ ছাড়া একই গ্রামের মতিন প্রাং, জাহিদ, ইব্রাহিম ,ওমেদ আলী, শাহআলম, আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর, আব্দুল্লাহ, আবুল ব্যাপারী, নান্নু, আদম আলী, উল্টাডাব গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, কবিরুল ইসলাম, আব্দুল মালেক, খায়রুল, নাজমূল, মনসুর ও শাকিল জানান, প্রতিদিন ২/৩ হাত করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জমির পাকা ধান চোখের সামনে ডুবে যাচ্ছে। অথচ ৫/৭‘শ টাকা মজুরি দিয়েও ধান কাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে জমির পাকা ধান জমিতেই ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এ সব গ্রামে ধানের শোকে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
অনেক স্থানে কৃষকদের পানির মধ্যে নেমে ডুবে যাওয়া পাকা ধান কাটার ব্যর্থ চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মঞ্জু আলম সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আকষ্মীক পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার অনেক স্থানে জমির পাকা ধান ডুবে গেছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। তবে অফিস বন্ধ থাকায় তাৎক্ষনিক ভাবে ক্ষতির পরিমান তিনি জানাতে পারেননি।