
সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলায় পলাতক ২৪ আসামীর মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত
চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার পলাতক ২৪ আসামীর সকল প্রকার স্থাবর অস্থাবর মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে শাহজাদপুর আমলী আদালতের বিচারক হাসিবুল হক শাহজাদপুর থানা পুলিশকে এ নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৩ জুন মঙ্গলবার এ মামলার চার্জশিটের উপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাদী শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম আদালতে উপস্থিত থেকে এ চার্জশীটের উপর কোন আপত্তি না করায় আদালত তা গ্রহণ করে নথিভূক্ত করেন। সেই সাথে এ মামলার পলাতক ২৪ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ছাড়া আদালত ১০ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন পলাতক সকল আসামীকে আদালতে হাজির করার জন্য শাহজাদপুর থানা পুলিশকে নির্দেশও দেন। সে অনুযায়ী শাহজাদপুর থানা পুলিশ এ দিন পলাতক ২৪ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে না পারায় আদালত তাদের মালামাল ক্রোকের এ নির্দেশ দেন বলে শাহজাদপুর আমলী আদালতের জিআরও আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপর দিকে এ মামলার জামিনে থাকা ৪ আসামী মিন্টু,আলমগীর,জহির ও দুলাল এ দিন আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দেন।
অপর দিকে এ মামলার চার্জশীট আদালতে গৃহিত হওয়ার পর গত ১৯ জুন সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামী হালিমুল হক মিরুকে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র পদ থেকে সাময়ীকভাবে বরখাস্ত করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে এ বরখাস্ত করেন।
সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিট গত ২ মে শাহজাদপুর আমলী আদালতে দাখিল করে পুলিশ। চার্জশিটে মেয়র মিরু, তার ভাই হাবিবুল হক মিন্টুসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এক মাস ১১ দিন পর ১৩ জুন মঙ্গলবার আদালতে এ চার্জশীটটি গৃহিত হল।
এদিকে নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম, শিমুলের আতœীয়-স্বজন ও সহকর্মীরা বার বার এ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থান্তরের জোর দাবী জানালেও তা এখনও পর্যন্ত কার্যকর না হওয়ায় তারা এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থান্তরের জোর দাবী জানিয়েছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারী শাহজাদপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় মেয়র মীরুর শর্টগানের গুলিতে সাংবাদিক শিমুল গুরুতর আহত হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারী নিহত হন। এ ঘটনায় শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে শাহজাদপুর পৌর মেয়র হালিমূল হক মীরু, তার ভাই মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিন সহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিন মাস পর গত ২ মে এ মামলার তৎকালিন তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ৩৮ জনকে আসামী করে শাহজাদপুর আমলী আদালতে একটি চার্জশিট দাখিল করেন। এ অভিযুক্তদের মধ্যে মেয়র মীরু ও নাছির সহ ১০ জন কারাগারে রয়েছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে মিন্টু,দুলাল,জহির ও আলমগীর এ ৪ জন জামিনে রয়েছেন। বাকি ২৪ জন আসামী পলাতক রয়েছে। আদালত এ সব আসামীর মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন।