
সুইডেনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
অনলাইন ডেস্ক: তিন দিনের সরকারি সফরে লন্ডন হয়ে সুইডেনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডন থেকে স্টকহোমের আরল্যান্ডা বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সুইডেনের রাষ্ট্রাচার প্রধান ক্লস মলিন, সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারওয়ার ও বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ইয়োহান ফ্রিসেল।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর মোটর শোভাযাত্রা করে তাকে স্টকহোমের গ্র্যান্ড হোটেলে নিয়ে আসা হয়। সুইডেন সফরে এই হোটেলেই অবস্থান করবেন তিনি।
বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীর এই প্রথম সুইডেনে দ্বি-পক্ষীয় সফর হচ্ছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এর আগে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদাতা অন্যতম এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেনের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার এই সফর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত রোববার সাংবাদিকদের বলেন, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর ও সম্প্রসারিত হবে এবং ইউরোপে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে তার বিশ্বাস।
এ সফরে সুইডেন-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ও নরডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের মধ্যে দুটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সুইডেনের রাজার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত এবং সুইডিশ পার্লামেন্ট পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা। সুইডেনের উপপ্রধানমন্ত্রী, ভারপ্রাপ্ত স্পিকার এবং বিচার ও অভিবাসনমন্ত্রীও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এছাড়া কয়েকটি সুইডিশ কোম্পানির প্রধান নির্বাহীও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও সুইডেন সফরে রয়েছেন।
শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ঢাকা থেকে রওনা হয়ে লন্ডনে একদিন যাত্রাবিরতি করেন। লেবার পার্টি থেকে ব্রিটেনের এমপি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত টিউলিপ সিদ্দিক ও রুশনারা আলী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে। এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারাও বুধবার লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান।
ঢাকায় সুইডেনের দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, শেখ হাসিনার এই সফর দুই দেশের শক্তিশালী সম্পর্ক মজবুত করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের ভিত হিসেবে কাজ করবে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে প্রথম সমর্থন দেওয়া ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সুইডেন। এবছর ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫ বছর পূর্তির উৎসব হয়েছে।
সুইডেনের সুপরিচিত রিটেইল চেইন এইচঅ্যান্ডএম বাংলাদেশ থেকে বছরে ৫০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক কেনে। দেশটির বাজারে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এই সফরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার হবে, দেশে বিনিয়োগ আসবে এবং অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতিসংঘ শান্তি মিশন, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার হবে।
সফর শেষে শুক্রবার ঢাকার পথে স্টকহোম ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন হয়ে শনিবার তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।